23 September, 2009

স্ট্র্যাচু অব লিবার্টি’- তৈরীর ভিতরের কাহিনী

বন্ধুত্বের নিদর্শনস্বরূপ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে প্রদত্ত ফ্রান্সের ঐতিহাসিক উপহার হল ‘স্ট্র্যাচু অব লিবার্টি’। পর্যটক হিসাবে নিউইয়র্কের প্রথম দর্শনীয় জিনিস ‘স্ট্র্যাচু অব লিবার্টি। প্রত্যহ হাজার হাজার দর্শনার্থী দ্বীপটিতে এসে ভিড় জমায়। সমুদ্রের উপরে এই লিবার্টি দ্বীপ।

যার উপর স্থাপিত হয়েছে এক বিরাট আকৃতির মহিয়সী মহিলার মূর্তি। হাতে প্রজ্বলিত অগ্নিশিখার মত টর্চ।,যেটা দেখা যায় সমুদ্রের বহুদূর থেকে। এটা আমেরিকার স্বাধীনতার প্রতীক মনুমেন্ট। তৈরী হয়েছে তামা ও লোহা দ্বারা। যাকে ১৯২৪ সালে আমেরিকান জাতীয় মনুমেন্ট ঘোষনা করা হয়েছে। মূর্তিটির মাথার মুকুট এর ডান হাতে অনির্বান টর্চ। এটি পৃথিবীর মূর্তিগুলোর মধ্যে অন্যতম বৃহৎ মূর্তি। যার উচ্চতা ৩০০ ফুটের উপরে। টর্চটি জ্বালানো থাকে নিচের বিদ্যুৎ থেকে,এই মনুমেন্টটি তৈরী হয়েছিল ফরাসিদের চিন্তধারার ওপরে।

ফ্রান্সের রাজা তৃতীয় নেপোলিয়ানের সময়ে এডওয়ার্ড রিনি লাবুলাই নামে এক ফরাসি পন্ডিত প্রথমে প্যারিসে বসে চিন্তা করেন যে, একটা বিরাট সিভিল ওয়ারে জিতে আমেরিকানরা একটা প্রভূত সম্পদশালী জাতিতে পরিনত হতে চলেছে। তাই ওদের মধ্যে এমন একটা কিছু করা দরকার, যা হবে ফরাসি আমেরিকান মৈত্রীর বন্ধন।
তিনি তদানীন্তন একজন বিখ্যাত ভাস্কর বার্থোডীর সাথে এ নিয়ে আলাপ করেন। ১৮৭১ সালে বার্থোডী যুক্তরাষ্ট্রে আসেন মনুমেন্টের প্রস্তাব নিয়ে ও স্থান নির্বাচনের জন্য। তিনি সমুদ্রের পারের নিউইয়র্ক শহরের বর্তমান দ্বীপটি পছন্দ করেন। প্রায় দু বছর ফরাসি ও আমেরিকান ভাস্কররা এ মূর্তি তৈরীর জন্য পরিশ্রম করেন। একে ৩০০ খন্ডে তৈরী করা হয়। এবং এরও পরে আড়াই মিলিমিটার প্রস্থ তামার শীট জড়িয়ে দেয়া হয়। ১৮৮৪ সালে এটা তৈরী সম্পন্ন হলে প্যারিসে সংরক্ষন করে রাখা হয়। ১৮৮৫ সালে এটি খন্ড-বিখন্ড করে টুকরা টুকরা হিসেবে আমেরিকায় পাঠানো হয়। ২২ তলা উচুঁ মূর্তিটির মাথার কাছে পৌছাতে ঘন্টার পর ঘন্টা লাইন ধরে দাঁড়াতে হয় পর্যটকদের। মূর্তিটির পাদানিতে কয়েকটি বড় বড় হলরুম আছে-যার মধ্যে আছে মিউজিয়াম। নতুন ইমিগ্র্যান্টদের ছবি এবং পূর্ন পরিচয়, কিভাবে মূর্তিটি তৈরী হলো ইত্যাদি তথ্য রয়েছে এই মিউজিয়ামে। আরও আছে প্রত্যেক তলায় মূর্তিটির বিশিষ্ট অংশ। যেমন-মাথা, প্রজ্বলিত টর্চ ইত্যাদি খন্ড খন্ড বিরাট মূর্তি ও ছবি। ১৯৮৬ সালে আবার নতুন করে ফরাসি ও আমেরিকান প্রকৌশলীরা ওটাকে মেরামত করে অংশবিশেষ বদলিয়ে নতুন অংশ লাগিয়ে দেন। প্রজ্বলিত টর্চটাও গোল্ড শ্লেটেড কপার ফ্রেম (যা রিফ্লেকশন দ্বারা জ্বালানো হয়) দ্বারা বদলানো হয়।১৮৮৬ সালের ২৮ অক্টোবর স্ট্যাচু অব লিবার্টি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়। ১৯৮৬ অত্যন্ত জাঁকজমকপূর্ন আনুষ্ঠানিকতায় এর শতবার্ষিকী উদযাপিত হয়।

20 September, 2009

মডার্ন ইনফরমেশন টেকনোলজী (এমআইটি),

কম্পিউটার প্রশিক্ষণ গ্রহনকারীদের জন্য মডার্ন ইনফরমেশন টেকনোলজী (এমআইটি), মধুরমোড়, ডাকবাংলা পাড়া, জেলা পরিষদ মার্কেট সংলগ্ন কুড়িগ্রামে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হইল।

মোঃ নুরজামাল বাহাদুর
চেয়াম্যান
মডার্ন ইনফরমেশন টেকনোলজী (এমআইটি),
মধুরমোড়, ডাকবাংলা পাড়া, জেলা পরিষদ মার্কেট সংলগ্ন কুড়িগ্রাম।

02 September, 2009

আডল্‌ফ হিটলার

আডল্‌ফ হিটলার (জার্মান ভাষায়: Adolf Hitler) (২০শে এপ্রিল, ১৮৮৯ - ৩০শে এপ্রিল, ১৯৪৫) অস্ট্রীয় বংশোদ্ভূত জার্মান রাজনীতিবিদ যিনি ন্যাশনাল সোশ্যালিস্ট জার্মান ওয়ার্কার্স পার্টির নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। হিটলার ১৯৩৩ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত জার্মানির চ্যান্সেলর এবং ১৯৩৪ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত সেদেশের ফুয়েরার ছিলেন।
হিটলার প্রথম বিশ্বযুদ্ধে সৈনিক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে ভাইমার প্রজাতন্ত্রে নাৎসি পার্টির নেতৃত্ব লাভ করেন। ক্যু করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছিলেন যে কারণে তাকে জেল খাটতে হয়েছিল। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে মোহনীয় বক্তৃতার মাধ্যমে জাতীয়তাবাদ, ইহুদি বিদ্বেষ ও সমাজতন্ত্র বিরোধিতা ছড়াতে থাকেন। এভাবেই এক সময় জনপ্রিয় নেতায় পরিণত হন। নাৎসিরা তাদের বিরোধী পক্ষের অনেককেই হত্যা করেছিল, রাষ্ট্রের অর্থনীতিকে ঢেলে সাজিয়েছিল, সামরিক বাহিনীকে নতুন নতুন সব অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত করেছিল এবং সর্বোপরি একটি সমগ্রতাবাদী ও ফ্যাসিবাদী একনায়কত্ব প্রতিষ্ঠা করেছিল। হিটলার এমন একটি বৈদেশিক নীতি গ্রহণ করেন যাতে সকল "লেবেনস্রাউম" (জীবন্ত অঞ্চল) দখল করে নেয়ার কথা বলা হয়। ১৯৩৯ সালে জার্মানরা পোল্যান্ড অধিকার করে এবং ফলশ্রুতিতে ব্রিটেন ও ফ্রান্স জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। এভাবেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়।
যুদ্ধের অক্ষ শক্তি তথা জার্মান নেতৃত্বাধীন শক্তি মহাদেশীয় ইউরোপ এবং আফ্রিকা ও এশিয়ার বেশ কিছু অঞ্চল দখল করে নিয়েছিল। কিন্তু অবশেষে মিত্র শক্তি বিজয় লাভ করে। ১৯৪৫ সালের মধ্যে জার্মানি ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়। হিটলারের রাজ্য জয় ও বর্ণবাদী আগ্রাসনের কারণে লক্ষ লক্ষ মানুষকে প্রাণ হারাতে হয়। ৬০ লক্ষ ইহুদিকে পরিকল্পনামাফিক হত্যা করা হয়। ইহুদি নিধনের এই ঘটনা ইতিহাসে হলোকস্ট নামে পরিচিত।
১৯৪৫ সালে যুদ্ধের শেষ দিনগুলোতে হিটলার বার্লিনেই ছিলেন। রেড আর্মি যখন বার্লিন প্রায় দখল করে নিচ্ছিল সে রকম একটা সময়ে ইভা ব্রাউনকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর ২৪ ঘণ্টা পার হওয়ার আগেই তিনি ফুয়েরারবুংকারে সস্ত্রীক আত্মহত্যা করেন।
জীবনী
কৈশোর ও যৌবনকাল
হিটলারের বাবা Alois বৈধভাবে (সমাজ সাপেক্ষে) জাত ছিলেন না। এক কথায় বলতে গেলে জারজ ছিলেন। তিনি জীবনের অনেকটা সময় শেষ নাম হিসেবে মায়ের নাম (Schicklgruber) ব্যবহার করেছিলেন। ১৮৭৬ সালেই Alois প্রথম হিটলার নামটি গ্রহণ করেন। তার ছেলে আডল্‌ফ-ও কখনও হিটলার ছাড়া অন্য কোন শেষ নাম ব্যবহার করেনি।
সরকারী কাস্টম্‌স থেকে অবসর গ্রহণের পর হিটলারের বাবা সপরিবারে আপার অস্ট্রিয়ার লিন্‌ৎস শহরে চলে আসেন। এখানেই হিটলারের বাল্যকাল অতিবাহিত হয়। এ কারণে সারাজীবন তিনি লিন্‌ৎসকে ভালবেসে গেছেন, কোন শহরকে এর উপরে স্থান দিতে পারেননি। বাবাকে তিনি খুব পছন্দ করতেন না বরং ভয় করতেন। কিন্তু মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালবাসার কোন কমতি ছিল না। ১৯০৩ সালে বাবা মারা যান। বাবার রেখে যাওয়া পেনশন ও সঞ্চয়ের অর্থ দিয়েই তাদের সংসার কোনমতে চলতে থাকে। অনেক ভোগান্তির পর ১৯০৭ সালে মাও মারা যান। হিটলার নিঃস হয়ে পড়েন। পড়াশোনায় বিশেষ সুবিধা করতে পারেননি। এক সময় ভিয়েনায় যান। কিন্তু চিত্রশিল্পী হবার স্বপ্ন নিয়ে আবার লিন্‌ৎসে ফিরে আসেন। আবার ভিয়েনায় যান। সামান্য যা ভাতা পেতেন দিয়ে তা দিয়ে ভিয়েনার মত শহরে চলতে-ফিরতে তার বেশ কষ্ট হতো। শিল্পী হিসেবেই তার বেশ সম্ভাবনা ছিল। এই উদ্দেশ্যে অস্ট্রিয়ার "একাডেমি অফ ফাইন আর্টস"-এ ভর্তি পরীক্ষা দেন। কিন্তু সুযোগ পাননি।
অগত্যা বেশ ক'বছর তাকে একাকী ও বিচ্ছিন্ন জীবন যাপন করতে হয়। এ সময় পোস্টকার্ড ও বিজ্ঞাপনের ছবি এঁকে সামান্য উপার্জন করতেন। এই অর্থ দিয়ে ভিয়েনার এক হোস্টেল থেকে আরেক হোস্টেলে বাস করতে থাকেন। এ সময় তার মধ্যে বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য দেখা গিয়েছিল যেগুলো তার পরবর্তী জীবন সম্বন্ধে আমাদের কিছু ধারণা পেতে সাহায্য করে। যেমন: একাকীত্ব, গোপনীয়তা, প্রাত্যহিক অস্তিত্বের বোহেমীয় ভাব (ছন্নছাড়া জীবন-যাপন), কসমোপলিটানিজ্‌মের প্রতি ঘৃণা এবং ভিয়েনার বহুজাতিক অবস্থার প্রতি বিতৃষ্ণা।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধে যোগদান
১৯১৩ সালে মিউনিখে চলে যান। ১৯১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে অস্ট্রীয় সামরিক বাহিনীতে ভর্তি হওয়ার চেষ্টা করেন। স্বাস্থ্যগত কারণে সৈনিক হবার সুযোগ পাননি। তাকে সামরিক বাহিনীর জন্য আনফিট ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার সাথে সাথে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে জার্মান সেনা বাহিনীতে যোগ দেন। তিনি ছিলেন ১৬তম বাভারিয়ান রিজার্ভ ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টে। যুদ্ধের পুরোটা সময় জার্মানিকে সেবা দিয়ে গেছেন। ১৯১৬ সালের অক্টোবরে আহত হওয়ার পর বেশ কিছুদিন বিশ্রামে ছিলেন। এছাড়া যুদ্ধের বাকিটা সময় সক্রিয় থেকেছেন। অধিকাংশ সময়ই সম্মুখ সারিতে থেকে হেডকোয়ার্টার্স রানার হিসেবে কাজ করেছেন। যুদ্ধে সাহসিকতা ও বীরত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯১৪ সালের ডিসেম্বরে সেকেন্ড ক্লাস আয়রন ক্রস লাভ করেন। ১৯১৮ সালর আগস্টে তাকে ফার্স্ট ক্লাস আয়রন ক্রস দেয়া হয়। একজন করপোরালের পক্ষে এটা বেশ বড় প্রাপ্তি। হিটলারের খুব উৎসাহের সাথে যুদ্ধ করেছেন। তার কাছে এটা ছিল বেসামরিক জীবনের উদ্দেশ্যহীনতা ও হতাশা থেকে মুক্তি। যুদ্ধ থেকেই তিনি কমরেডশিপ ও নিয়মানুবর্তীতা শিখেন। সেই সাথে যুদ্ধের নায়কোচিত গুণে বিশ্বাস করতে শুরু করেন।
রাজনীতিতে প্রবেশ
প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মানি হেরে যায়। হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে ফিরে হিটলার রাজনীতিতে যোগ দেন। ১৯১৯ সালের মে-জুনের দিকে জার্মানির বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে মিউনিখের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় হন। সেপ্টেম্বরে মিউনিখের ক্ষুদ্র দল "জার্মান ওয়ার্কার্স পার্টি"-তে সামরিক রাজনৈতিক এজেন্ট হিসেবে কাজ শুরু করেন। ১৯২০ সালে তাকে এই দলের প্রচারণার দায়িত্ব দেয়া হয়। দলের ভেতরে নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করার জন্য তিনি সেনাবাহিনী ত্যাগ করেন। এই বছরই দলের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় National-sozialistische Deutsche Arbeiterpartei (নাৎসি পার্টি)। জার্মানির তৎকালীন পরিস্থিতিতে এ ধরণের একটি রাজনৈতিক দলের উত্তরণের বেশ ভাল সম্ভাবনা ছিল। কারণ যুদ্ধের বিভীষিকা এবং শান্তি চুক্তিতে জার্মানির বিশাল পরাজয়ের কারণে জনমনে অসন্তোষ দানা বেধে উঠেছিল। এর সাথে ছিল অর্থনৈতিক অস্থিরতা। বাভারিয়াতে এই অবস্থা ছিল আরও বিরূপ। সেখানে বার্লিনের প্রজাতন্ত্রী সরকারের তীব্র বিরোধিতা প্রকাশিত হতে শুরু করেছিল। হিটলারও বাভারিয়ার মিউনিখ শহরেই তার কাজ চালিয়ে যেতে থাকেন। ১৯২০ সালেই একটি ডনপন্থী সরকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য বার্লিনে সামরিক ক্যু করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু এই ক্যু ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়।
আডল্‌ফ হিটলার (জার্মান ভাষায়: Adolf Hitler) (২০শে এপ্রিল, ১৮৮৯ - ৩০শে এপ্রিল, ১৯৪৫) অস্ট্রীয় বংশোদ্ভূত জার্মান রাজনীতিবিদ যিনি ন্যাশনাল সোশ্যালিস্ট জার্মান ওয়ার্কার্স পার্টির নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। হিটলার ১৯৩৩ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত জার্মানির চ্যান্সেলর এবং ১৯৩৪ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত সেদেশের ফুয়েরার ছিলেন।
হিটলার প্রথম বিশ্বযুদ্ধে সৈনিক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে ভাইমার প্রজাতন্ত্রে নাৎসি পার্টির নেতৃত্ব লাভ করেন। ক্যু করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছিলেন যে কারণে তাকে জেল খাটতে হয়েছিল। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে মোহনীয় বক্তৃতার মাধ্যমে জাতীয়তাবাদ, ইহুদি বিদ্বেষ ও সমাজতন্ত্র বিরোধিতা ছড়াতে থাকেন। এভাবেই এক সময় জনপ্রিয় নেতায় পরিণত হন। নাৎসিরা তাদের বিরোধী পক্ষের অনেককেই হত্যা করেছিল, রাষ্ট্রের অর্থনীতিকে ঢেলে সাজিয়েছিল, সামরিক বাহিনীকে নতুন নতুন সব অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত করেছিল এবং সর্বোপরি একটি সমগ্রতাবাদী ও ফ্যাসিবাদী একনায়কত্ব প্রতিষ্ঠা করেছিল। হিটলার এমন একটি বৈদেশিক নীতি গ্রহণ করেন যাতে সকল "লেবেনস্রাউম" (জীবন্ত অঞ্চল) দখল করে নেয়ার কথা বলা হয়। ১৯৩৯ সালে জার্মানরা পোল্যান্ড অধিকার করে এবং ফলশ্রুতিতে ব্রিটেন ও ফ্রান্স জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। এভাবেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়।
যুদ্ধের অক্ষ শক্তি তথা জার্মান নেতৃত্বাধীন শক্তি মহাদেশীয় ইউরোপ এবং আফ্রিকা ও এশিয়ার বেশ কিছু অঞ্চল দখল করে নিয়েছিল। কিন্তু অবশেষে মিত্র শক্তি বিজয় লাভ করে। ১৯৪৫ সালের মধ্যে জার্মানি ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়। হিটলারের রাজ্য জয় ও বর্ণবাদী আগ্রাসনের কারণে লক্ষ লক্ষ মানুষকে প্রাণ হারাতে হয়। ৬০ লক্ষ ইহুদিকে পরিকল্পনামাফিক হত্যা করা হয়। ইহুদি নিধনের এই ঘটনা ইতিহাসে হলোকস্ট নামে পরিচিত।
১৯৪৫ সালে যুদ্ধের শেষ দিনগুলোতে হিটলার বার্লিনেই ছিলেন। রেড আর্মি যখন বার্লিন প্রায় দখল করে নিচ্ছিল সে রকম একটা সময়ে ইভা ব্রাউনকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর ২৪ ঘণ্টা পার হওয়ার আগেই তিনি ফুয়েরারবুংকারে সস্ত্রীক আত্মহত্যা করেন।
জীবনী
কৈশোর ও যৌবনকাল
হিটলারের বাবা Alois বৈধভাবে (সমাজ সাপেক্ষে) জাত ছিলেন না। এক কথায় বলতে গেলে জারজ ছিলেন। তিনি জীবনের অনেকটা সময় শেষ নাম হিসেবে মায়ের নাম (Schicklgruber) ব্যবহার করেছিলেন। ১৮৭৬ সালেই Alois প্রথম হিটলার নামটি গ্রহণ করেন। তার ছেলে আডল্‌ফ-ও কখনও হিটলার ছাড়া অন্য কোন শেষ নাম ব্যবহার করেনি।
সরকারী কাস্টম্‌স থেকে অবসর গ্রহণের পর হিটলারের বাবা সপরিবারে আপার অস্ট্রিয়ার লিন্‌ৎস শহরে চলে আসেন। এখানেই হিটলারের বাল্যকাল অতিবাহিত হয়। এ কারণে সারাজীবন তিনি লিন্‌ৎসকে ভালবেসে গেছেন, কোন শহরকে এর উপরে স্থান দিতে পারেননি। বাবাকে তিনি খুব পছন্দ করতেন না বরং ভয় করতেন। কিন্তু মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালবাসার কোন কমতি ছিল না। ১৯০৩ সালে বাবা মারা যান। বাবার রেখে যাওয়া পেনশন ও সঞ্চয়ের অর্থ দিয়েই তাদের সংসার কোনমতে চলতে থাকে। অনেক ভোগান্তির পর ১৯০৭ সালে মাও মারা যান। হিটলার নিঃস হয়ে পড়েন। পড়াশোনায় বিশেষ সুবিধা করতে পারেননি। এক সময় ভিয়েনায় যান। কিন্তু চিত্রশিল্পী হবার স্বপ্ন নিয়ে আবার লিন্‌ৎসে ফিরে আসেন। আবার ভিয়েনায় যান। সামান্য যা ভাতা পেতেন দিয়ে তা দিয়ে ভিয়েনার মত শহরে চলতে-ফিরতে তার বেশ কষ্ট হতো। শিল্পী হিসেবেই তার বেশ সম্ভাবনা ছিল। এই উদ্দেশ্যে অস্ট্রিয়ার "একাডেমি অফ ফাইন আর্টস"-এ ভর্তি পরীক্ষা দেন। কিন্তু সুযোগ পাননি।
অগত্যা বেশ ক'বছর তাকে একাকী ও বিচ্ছিন্ন জীবন যাপন করতে হয়। এ সময় পোস্টকার্ড ও বিজ্ঞাপনের ছবি এঁকে সামান্য উপার্জন করতেন। এই অর্থ দিয়ে ভিয়েনার এক হোস্টেল থেকে আরেক হোস্টেলে বাস করতে থাকেন। এ সময় তার মধ্যে বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য দেখা গিয়েছিল যেগুলো তার পরবর্তী জীবন সম্বন্ধে আমাদের কিছু ধারণা পেতে সাহায্য করে। যেমন: একাকীত্ব, গোপনীয়তা, প্রাত্যহিক অস্তিত্বের বোহেমীয় ভাব (ছন্নছাড়া জীবন-যাপন), কসমোপলিটানিজ্‌মের প্রতি ঘৃণা এবং ভিয়েনার বহুজাতিক অবস্থার প্রতি বিতৃষ্ণা।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধে যোগদান
১৯১৩ সালে মিউনিখে চলে যান। ১৯১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে অস্ট্রীয় সামরিক বাহিনীতে ভর্তি হওয়ার চেষ্টা করেন। স্বাস্থ্যগত কারণে সৈনিক হবার সুযোগ পাননি। তাকে সামরিক বাহিনীর জন্য আনফিট ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার সাথে সাথে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে জার্মান সেনা বাহিনীতে যোগ দেন। তিনি ছিলেন ১৬তম বাভারিয়ান রিজার্ভ ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টে। যুদ্ধের পুরোটা সময় জার্মানিকে সেবা দিয়ে গেছেন। ১৯১৬ সালের অক্টোবরে আহত হওয়ার পর বেশ কিছুদিন বিশ্রামে ছিলেন। এছাড়া যুদ্ধের বাকিটা সময় সক্রিয় থেকেছেন। অধিকাংশ সময়ই সম্মুখ সারিতে থেকে হেডকোয়ার্টার্স রানার হিসেবে কাজ করেছেন। যুদ্ধে সাহসিকতা ও বীরত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯১৪ সালের ডিসেম্বরে সেকেন্ড ক্লাস আয়রন ক্রস লাভ করেন। ১৯১৮ সালর আগস্টে তাকে ফার্স্ট ক্লাস আয়রন ক্রস দেয়া হয়। একজন করপোরালের পক্ষে এটা বেশ বড় প্রাপ্তি। হিটলারের খুব উৎসাহের সাথে যুদ্ধ করেছেন। তার কাছে এটা ছিল বেসামরিক জীবনের উদ্দেশ্যহীনতা ও হতাশা থেকে মুক্তি। যুদ্ধ থেকেই তিনি কমরেডশিপ ও নিয়মানুবর্তীতা শিখেন। সেই সাথে যুদ্ধের নায়কোচিত গুণে বিশ্বাস করতে শুরু করেন।
রাজনীতিতে প্রবেশ
প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মানি হেরে যায়। হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে ফিরে হিটলার রাজনীতিতে যোগ দেন। ১৯১৯ সালের মে-জুনের দিকে জার্মানির বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে মিউনিখের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় হন। সেপ্টেম্বরে মিউনিখের ক্ষুদ্র দল "জার্মান ওয়ার্কার্স পার্টি"-তে সামরিক রাজনৈতিক এজেন্ট হিসেবে কাজ শুরু করেন। ১৯২০ সালে তাকে এই দলের প্রচারণার দায়িত্ব দেয়া হয়। দলের ভেতরে নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করার জন্য তিনি সেনাবাহিনী ত্যাগ করেন। এই বছরই দলের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় National-sozialistische Deutsche Arbeiterpartei (নাৎসি পার্টি)। জার্মানির তৎকালীন পরিস্থিতিতে এ ধরণের একটি রাজনৈতিক দলের উত্তরণের বেশ ভাল সম্ভাবনা ছিল। কারণ যুদ্ধের বিভীষিকা এবং শান্তি চুক্তিতে জার্মানির বিশাল পরাজয়ের কারণে জনমনে অসন্তোষ দানা বেধে উঠেছিল। এর সাথে ছিল অর্থনৈতিক অস্থিরতা। বাভারিয়াতে এই অবস্থা ছিল আরও বিরূপ। সেখানে বার্লিনের প্রজাতন্ত্রী সরকারের তীব্র বিরোধিতা প্রকাশিত হতে শুরু করেছিল। হিটলারও বাভারিয়ার মিউনিখ শহরেই তার কাজ চালিয়ে যেতে থাকেন। ১৯২০ সালেই একটি ডনপন্থী সরকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য বার্লিনে সামরিক ক্যু করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু এই ক্যু ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়।

লিওনার্দো দা ভিঞ্চি



লাল খড়িতে ১৫১২-১৫১৫ খ্রীস্টাব্দের মধ্যে আঁকা লিওনার্দোর আত্মপ্রতিকৃতি

ইতালির ফ্লোরেন্সে স্থাপিত লিওনার্দোর একটি মূর্তি

লিওনার্দো দা ভিঞ্চি (ইতালীয় Leonardo da Vinci লেওনার্দো দা ভিঞ্চি, পূর্ণ নাম Leonardo di ser Piero da Vinci লেওনার্দো দি সের পিয়েরো দা ভিঞ্চি) (এপ্রিল ১৫, ১৪৫২ - মে ২, ১৫১৯) ইতালীয় রেনেসাঁসের কালজয়ী চিত্রশিল্পী। অবশ্য বহুমুখী প্রতিভাধর লিওনার্দো দা ভিঞ্চির অন্যান্য পরিচয়ও সুবিদিত- ভাস্কর, স্হপতি, সংগীতজ্ঞ, সমরযন্ত্রশিল্পী এবং বিংশ শতাব্দীর বহু বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের নেপথ্য জনক। লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির জন্ম ফ্লোরেন্সের অদূরবতী ভিঞ্চী নগরের এক গ্রামে, ১৪৫২ সালের ১৫শে এপ্রিল। তাঁর বিখ্যাত শিল্পকর্ম গুলোর মধ্যে মোনালিসা, দ্য লাস্ট সাপার অন্যতম। তাঁর শৈল্পিক মেধার বিকাশ ঘটে খুব অল্প বয়সেই। আনুমানিক ১৪৬৯ সালে রেনেসাঁসের অপর বিশিষ্ট শিল্পী ও ভাস্কর আন্দ্রেয়া ভেরোচ্চিয়োর কাছে ছবি আঁকায় ভিঞ্চির শিক্ষানবিশ জীবনের সূচনা। এই শিক্ষাগুরুর অধীনেই তিনি ১৪৭৬ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয়ে, বিশেষত চিত্রাঙ্কনে বিশেষ দক্ষতা অর্জন করেন। ১৪৭২ সালে তিনি চিত্রশিল্পীদের গীল্ডে ভর্তি হন এবং এই সময় থেকেই তাঁর চিত্রকর জীবনের সূচনা হয়।


লিওনার্দোর আঁকা মোনালিসা

১৪৭৮ সাল থেকে ১৫১৬-১৭ এবং ১৫১৯ সাল অর্থাৎ মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত প্রসারিত ও বিভিন্ন পর্বেবিভক্ত, এক দীর্ঘ ও অক্লান্ত কর্ম সাধনার জীবন তাঁর। গীর্জা ও রাজপ্রাসাদের দেয়ালে চিত্রাঙ্কন এবং রাজকীয় ব্যাক্তিবর্গের ভাস্কর্য নির্মাণের পাশাপাশি বেসামরিক ও সামরিক প্রকৌশলী হিসাবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান জ্ঞানের প্রয়োগ, অঙ্গব্যাবচ্ছেদবিদ্যা, জীববিদ্যা, গণিত ও পদার্থবিদ্যার মত বিচিত্র সব বিষয়ের ক্ষেত্রেতিনি গভীর অনুসন্ধিৎসা প্রদর্শন করেন এবং মৌলিক উদ্ভাবনী শক্তির পরিচয় দেন।

আনুমানিক ১৪৮২ সালে তিনি মিলান গমন করেন এবং সেখানে অবস্থান কালে তাঁর বিখ্যাত দেয়াল চিত্র দ্য লাস্ট সাপার অঙ্কন করেন। আনুমানিক ১৫০০ সালে তিনি ফ্লোরেন্স ফিরে আসেন এবং সামরিক বিভাগে প্রকৌশলী পদে নিয়োগ লাভ করেন। এই সময়েই তিনি তাঁর বিশ্বখ্যাত চিত্রকর্ম মোনালিসা অঙ্কন করেন। জীবনের শেষ কাল তিনি ফ্রান্সএ কাটান।

Sobkisu: যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও প্রাসঙ্গিক কিছু কথা

Sobkisu: যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও প্রাসঙ্গিক কিছু কথা

01 September, 2009

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও প্রাসঙ্গিক কিছু কথা




২৫শে মার্চ ১৯৭১, অপারেশন সার্চলাইটের অযুহাতে পাকিস্তানী সামরিক বাহিনীর প্রত্যক্ষ অত্যাচারে যা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানিদের মারাত্মক নাড়া দেয় এবং তারা বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন স্থানে তুমুল প্রতিবাদ গড়ে তোলে যা পরবর্তিতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে রুপ নেয়। এই সংগ্রামে দেশকে পশ্চিম পাকিস্তানের অত্যাচার থেকে মুক্ত করার প্রত্যয় নিয়ে নিজের বুকের তাজা রক্ত ঢেলে লক্ষ লক্ষ বাংলাদেশী তরুন, কিশোর, বৃদ্ধ। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী এবং তাদের এদেশীয় দোষরদের হাতে সম্ভ্রম হারায় অসংখ্য নারী। পাকিস্তানী বাহিনীর নির্দেশে এদেশীয় প্রতারক দল আলবদর, আলশামসের হাতে বিপুল সংখ্যক বুদ্ধিজীবি শহীদ হন।

যুদ্ধের ঠিক পরবর্তিতে প্রথমেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে কথা উঠে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ তার এক মন্তব্যে বলেন যুক্তরাষ্ট্রের চাপের মুখে হয়তো পাকিস্তানি সেনাসদস্যদের বিচারের আওতায় আনা সম্ভব হবেনা। তাছাড়া ভারত এবং তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নও বিচারের ব্যাপারে উৎসাহী ছিলোনা।

২৪শে ডিসেম্বর ১৯৭১ তৎকালীন সরাষ্ট্রমন্ত্রী এ. এইচ. এম. কামরুজ্জামান বলেন, "কোন যুদ্ধাপরাধী আইনের হাত থেকে রক্ষা পাবেনা। এমনকি গনহত্যা এবং অত্যাচারে জড়িত পাকিস্তানী সেনাসদস্যরাও বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।"

শেখ মুজিবর রহমান এবং ইন্দিরা গান্ধীর এক সভা শেষে এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয় যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ক্ষেত্রে ভারত সকল সহয়তা প্রদান করবে।

১৯৭২ এর জুলাইয়ের মধ্যেই বাংলাদেশ সরকার যুদ্ধাপরাধীর সংখ্যা ৪০০ থেকে ১৯৫ এ নিয়ে আসে। জে. এন. ডিক্সিট তার বইতে উল্লেখ করেন বাংলাদেশ সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য প্রয়োজনীয় প্রমান সংগ্রহে নিরুৎসাহিত ছিল। এর কোন সুনির্দিষ্ট কারণ তিনি উল্লেখ না করলেও সম্ভাব্য কারণ হিসেবে বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের ভবিষ্যত কুটনৈতিক সম্পর্ক এবং বাংলাদেশকে বিশ্বের অন্যান্য মুসলিম দেশগুলোর স্বীকৃতি আদায়ের ব্যাপারটি তিনি উল্লেখ করেন। ত্রিজাতীয় চুক্তির মধ্য দিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ইস্যুটি চাপা পড়ে যায়।

এরপর জাতির মহান নেতা শেখ মুজিবকে হারায়, দীর্ঘদিন সামরিক শাসন, চিহ্নিত রাজাকারদের দেশে পুনরায় প্রতিষ্ঠাকরণ এসব দেখতে এবং সহ্য করতে হয় এই জাতিকে। এরই ধারাবাহিকতায় ৭১এর চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী গোলাম আজমকে ২৯শে ডিসেম্বর ১৯৯১ জামায়াত ইসলামী বাংলাদেশ নামক রাজনৈতিক দলের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের রাজনীতিতে আবারও সক্রিয় হতেও দেখলাম আমরা।

গোলাম আযম এবং তার অনুসারীদের বিচারের দাবিতে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ১৪ ফেব্রুয়ারী ১৯৯১ এ "একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি" নামক জাতীয় কমিটি গঠন এবং গন আদালতে তাদের বিচার চাইতেও দেখলাম। আরও দেখলাম সংসদে শেখ হাসিনাকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাইতে এবং সেই বিল পাস না হতে।

তারপর দেখলাম দীর্ঘ পাঁচটি বছর ক্ষমতায় থেকে সেই শেখ হাসিনা এবং স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী বাংলাদেশ আওয়ামীলিগকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার না করে ক্ষমতা থেকে চলে যেতে এবং পরবর্তীতে স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের জাতীয়তাবাদে উদ্ভুদ্ধ দল বি এন পি কে এই যুদ্ধাপরাধীদের সাথে জোট করে ক্ষমতায় এসে মন্ত্রনালয় ভাগাভাগি করতে। দেখলাম এদেশের মানুষের ট্যাক্সের টাকায় কেনা সরকারি গাড়িতে পেট্রোল জ্বালিয়ে, গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়ে রাজাকারদের ঘুড়ে বেড়াতে। দেখলাম এক মুক্তিযোদ্ধাকে সেই রাজাকারদের উত্তরসূরীর পায়ের লাথি খেতে। দেখলাম টিভি চ্যানেলে চিহ্নিত রাজাকারকে বুক ফুলিয়ে বলতে ৭১-এ তারা কোন ভূল করেনি।

তারপরও আমরা নিশ্চুপ। আমরা চেয়ে আছি আমাদের তথাকথিত সরকারের দিকে তারা করবে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার। নিজেরা নিজেদের মাঝে দলাদলি করছি এ করলোনা, ও করলোনা বলে। আমাদের পূর্বপুরুষরা ভুল করেছে, তাই তাদের দোষারোপ করেই কি আমরা নিজেদেরকে দায়িত্ব থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারবো? নাকি তাদের সেই ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজেদের শুধরে নিবো?

কুড়িগ্রামের বিভিন্ন উপজেলা হাসপাতালে ৮টি এক্স-রে মেশিনের ৭টিই অচল

বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে কুড়িগ্রামের উপজেলা হাসপাতালগুলোতে সরবরাহকৃত ৮টি এক্স-রে মেশিনের মধ্যে ৭টিই দীর্ঘদিন ধরে অকেজো অবস্থায় পড়ে রয়েছে। হাসপাতালগুলোর পারিপাশ্বর্িক অবস্থা, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা এবং মেশিনগুলো চালানোর জন্য টেকনিশিয়ানের ব্যবস্থা বিবেচনা না করে ২০০৩ থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে লাখ-লাখ টাকার ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন সরবরাহ করা হয়। স্বাস্থ্য দপ্তরের সেন্ট্রাল মেডিকেল স্টোর ডিপো (সিএমএসডি) থেকে মেশিনগুলো সরবরাহের পর স্থাপনের কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় ২০০৮ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত বাক্সবন্দি অবস্থায় পড়েছিল। এরপর তত্ত্বাবধাযক সরকারের আমলে যৌথবাহিনীর চাপে বাক্সবন্দি ৮টি এক্স-রে মেশিন স্থাপন করা হলে ৭টি মেশিন চালু করা সম্ভব হয়নি। ফলে দরিদ্র এ জনপদের মানুষ স্বল্পমূল্যে এক্স-রে সুবিধা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্র জানায়, জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে মেশিনের মধ্যে ১০টিই দীর্ঘদিন থেকে অচল হয়ে পড়ে আছে। শুধু ২টি চালু রয়েছে। এর মধ্যে সদর হাসপাতালে সিমেন্স বাংলাদেশ ১৯৯৫ সালে এবং ১৯৯৮ সালে ২টি এক্স-রে মেশিন সরবরাহ করে। এর ১টি চালু রয়েছে এবং অন্যটি নষ্ট হওয়ায় কনডেম ঘোষণা করা হয়েছে। বক্ষব্যাধি হাসপাতালেও সিমেন্স বাংলাদেশ ১টি মেশিন ১৯৮৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সরবরাহ করে। এটি প্রায় ১০ বছর ধরে অচল রয়েছে। মেরামতের জন্য সিএমএসডিতে একাধিকবার চিঠি পাঠানো হলেও কোন কাজ হয়নি। সিএমএসডি থেকে ১৯৯৫ সালে উলিপুর হাসপাতালে সরবরাহ করা ১টি মেশিনও প্রায় ৭ বছর ধরে নষ্ট হয়ে পড়ে রয়েছে। এছাড়া সিএমএসডি থেকে রৌমারী হাসপাতালে ২০০২ সালে ১টি এবং ২০০৪ সালে ১টি মোট ২টি, ২০০৫ সালে চিলমারী, রাজীবপুর ও নাগেশ্বরী হাসপাতালে ১টি করে এবং ২০০৩ সালে ফুলবাড়ী হাসপাতালে ১টি মোট ৮টি ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন সরবরাহ করা হলেও এগুলো স্থাপন না করে দীর্ঘদিন বাক্সবন্দি অবস্থায় ফেলে রাখা হয়েছিল। এরপর ২০০৮ সালে এগুলো স্থাপন করা হলে ৭টি চালু করা যায়নি। শুধুমাত্র নাগেশ্বরী উপজেলা হাসপাতালের মেশিনটি চালু রয়েছে। চিলমারী হাসপাতালের মেশিনটি কি প্যানেল নষ্ট হওয়ায় এটি মেরামতে ২৮ হাজার টাকা চাওয়া হলেও বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। বিদ্যুতের লো-ভোল্টেজ ও হাই ভোল্টেজ সমস্যার কারণে ফুলবাড়ীর মেশিনটি বন্ধ রাখা হয়েছে। অন্য মেশিনগুলো নানান ত্রুটির জন্য অচল রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে কুড়িগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. তৌফিকুল ইসলাম জানান, নষ্ট এক্স-রে মেশিনগুলো মেরামতের জন্য সিএমএসডিতে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এছাড়া এক্স-রে মেশিনগুলোর বর্তমান অবস্থা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে জানানো হয়েছে।

কুড়িগ্রামে সাবেক মন্ত্রী তাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ


কুড়িগ্রামের সাবেক সাংসদ ও মন্ত্রী তাজুল ইসলাম চৌধুরী এবং তার ছোট ভাই সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী সফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ করা হয়েছে। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় দু'জন মুক্তিযোদ্ধা হত্যা, নিরীহ গ্রামবাসীদের ঘরবাড়ি জ্বালানো ও পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে সহায়তা করার অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। সোমবার কুড়িগ্রাম সদর থানায় অভিযোগটি দায়ের করেন মুক্তিযুদ্ধকালীন কোম্পানি কমান্ডার বীর প্রতীক আব্দুল হাই সরকার।


অভিযোগটি জিডি হিসেবে গ্রহণ করে নথিভুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কুড়িগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সোহেলী ফেরদৌস।

মামলায় সাক্ষী করা হয়েছে ঘটনার সময় উপস্থিত এলাকার লোকজন এবং তার কোম্পানির অধীন মুক্তিযোদ্ধাদের।

তাজুল ইসলাম চৌধুরী কুড়িগ্রাম-২ আসনের সাংসদ এবং এরশাদ সরকারের সময় ভূমিমন্ত্রী ছিলেন।

কুড়িগ্রাম সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর বলেন, অভিযোগটি জিডি হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়েছে। তাজুল ইসলাম চৌধুরী ও চৌধুরী সফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে দুজন মুক্তিযোদ্ধা হত্যা, নিরীহ মানুষের বাড়িঘর পোড়ানো এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সংবাদ গোপনে হানাদার বাহিনীর ক্যাম্পে পাঠানোর অভিযোগ আনা হয়।

অভিযোগে বলা হয়, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় তাজুল ইসলাম চৌধুরী ও চৌধুরী সফিকুল ইসলামের বাবা মৃত পনির উদ্দিন মিয়ার নেতৃত্বে কুড়িগ্রামে পিস কমিটি গঠিত হয়েছিল। দুই ভাইয়ের সহযোগিতায় গঠিত হয়েছিল রাজাকার বাহিনী। তাজুল ইসলাম ও তার বাবা মোগলবাসা এলাকায় দুই শতাধিক নিরীহ গ্রামবাসীর ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। ডোমাস চন্দ্র ও আব্দুল করিম নামের দুজন মুক্তিযোদ্ধাকে ধরে নিয়ে হত্যা করেছে। এছাড়াও তাদের নেতৃত্বে কাঠালবাড়ি গণহত্যা ও অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটে।

অভিযোগনামায় আরও বলা হয়, তাজুলের ইসলামের ছোটভাই সফিকুল ইসলাম যুদ্ধের সময় ছিলেন রৌমারী ও মানকার চর এলাকায়। সেখান থেকে গোপনে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবাদ হানাদার বাহিনীর ক্যাম্পে পাঠাতেন। স্বাধীনতার পর আব্দুল হাই সরকারকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে মৃত্যুর হুমকি দিয়ে তার কাছ থেকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নিজের পরিচয়পত্র লিখিয়ে নেন।

এ ব্যাপারে কুড়িগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সোহেলী ফেরদৌস বলেন, "অভিযোগটি জিডি হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্ত করার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"

**কুড়িগ্রামে ধাতব খনিজ বালির বিশাল মজুদ

বাংলাদেশের সর্ব উত্তরে অবস্থিত কুড়িগ্রাম জেলা। বিগত কয়েক বছর সংবাদমাধ্যমগুলোতে আলোচিত হয়েছে মঙ্গাপীড়িত হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর এলাকা হিসেবে। অথচ এ এলাকাতেই যে দেশের অন্যতম বৃহৎ খনিজ পদার্থের মজুদ লুকায়িত আছে, তা সম্ভবত কেউই ভাবেননি। ভূতাত্ত্বিক জরিপের মাধ্যমে জানা গেছে, কুড়িগ্রাম জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র নদের বালিতে ধাতব খনিজ পদার্থের বিশাল মজুদ বিদ্যমান। বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ বিভাগের কয়েকজন ভূতত্তবিদ বেশ কয়েক বছর আগে কুড়িগ্রামের এ খনিজ বালির অবস্থান আবিষ্কার করেন।এসব মূল্যবান খনিজ পদার্থের মধ্যে রিউটাইল, জিরকন, গারনেট, ইলমেনাইট, কায়ানাইট, মোনাজাইট ও ম্যাগনেটাইট অন্তর্ভুক্ত। সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকার একটি ব্রিটিশ কোম্পানিকে এ সম্পদের অর্থনৈতিক ও উত্তোলন-সম্ভাব্যতা যাচাই করার লক্ষ্যে অনুসন্ধানের অনুমতি প্রদান করে। বিশ্ববাজারে এসব খনিজ পদার্থের চাহিদা ও মূল্য বিপুল এবং আধুনিক যন্ত্র-সভ্যতার বহুবিধ শিল্প এসব খনিজ পদার্থ ছাড়া চলতে পারে না।

১৯৬২ সালে কক্সবাজার-টেকনাফ সমুদ্র সৈকতে আবিষ্কৃত একই ধরনের খনিজ বালির অবস্থান সম্পর্কে অনেকেই অবগত আছেন। ভূবিজ্ঞানীরা বলছেন, কুড়িগ্রামে এ খনিজ বালির মজুদ কক্সবাজার-টেকনাফ এলাকার মজুদের তুলনায় অনেক অনেক গুণ বেশি। কেবল তা-ই নয়, কুড়িগ্রামের এই খনিজ বালির মজুদ বিশ্বে সেরা খনিজ বালির মজুদের সমতুল্য।

কেমন করে সৃষ্টি হলো এ মূল্যবান খনিজ বালির মজুদ? বহুযুগ ধরে ব্রহ্মপুত্র নদটি প্রবাহিত পানির সঙ্গে আনীত বালী তার বক্ষে ধারণ করতে থাকে এবং ক্রমান্বয়ে তলদেশে পুরু আকারের বালিস্তর জমা করে। ভারতের মেঘালয় ও আসাম রাজ্যের মূল্যবান খনিজ পদার্থসমৃদ্ধ পাহাড়ি পথকে ক্ষয় করে ব্রহ্মপুত্র নদ এ মূল্যবান বালি জোগাড় করে এবং বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলায় প্রবেশ করে নদীবক্ষে তা জমা হয়। এক ভূতাত্ত্বিক জরিপে প্রতীয়মান হয়, বিগত ২৮ হাজার বছরে নদীবক্ষে এ রকম প্রায় ৫০ মিটার বালিস্তর জমা হয়েছে। সাধারণ বালির আকারে এলেও এর ভেতর মূল্যবান খনিজ পদার্থকণার আধিক্য তাকে সাধারণ বালি থেকে আলাদা করে দেয়। আর এভাবেই যুগের বিবর্তনে জমা হয় মূল্যবান খনিজ বালির এ সম্ভার। বিশেষজ্ঞ মহল এ মত প্রকাশ করেছেন যে কুড়িগ্রামে প্রাপ্ত এ বিরাট খনিজ মজুদকে যথাযথভাবে খনন, আহরণ ও বাজারজাত করতে পারলে তা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বড় আকারের সহায়তা বয়ে নিয়ে আসবে।

বাংলাদেশের খনিজসম্পদ আহরণ ও উন্নয়নের অভিজ্ঞতা সব ক্ষেত্র সুখকর নয়, তা বিগত বছরগুলোর কার্যক্রম থেকে প্রতীয়মান হয়। বিশেষ করে বিদেশি কোম্পানিকে দেশের খনিজসম্পদ উন্নয়নে নিয়োগের ক্ষেত্রে যেসব চুক্তি সম্পাদন করা হয়, তা অনেক ক্ষেত্রে দেশীয় স্বার্থ রক্ষায় ব্যর্থ হয়। এ কথা যদিও সঠিক যে বিদেশি আধুনিক প্রযুক্তি খনিজসম্পদ আহরণে প্রয়োজন হতে পারে, কিন্তু বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তিতে দেশীয় স্বার্থ সমুন্নত না রাখলে তার মূল উদ্দেশ্যই ব্যর্থ হতে বাধ্য। বিদেশি তেল কোম্পানিগুলো দেশের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি অনুযায়ী কস্ট রিকভারি নামে যে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিয়ে যায়, তা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। একইভাবে দেশের কয়লা উত্তোলনের ক্ষেত্র বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে মাত্র ছয় শতাংশ রয়্যালটি বাংলাদেশ পাবে মর্মে যে চুক্ত করা হয়, তার পরিণতি আমরা দেখতে পাই বিক্ষুব্ধ জনগোষ্ঠীর আত্মাহুতির মাধ্যমে।

কুড়িগ্রামের খনিজ বালির অর্থনৈতিক ও উত্তোলন-সম্ভাব্যতা যাচাই করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার কাবর্ন মাইনিং নামের একটি ব্রিটিশ কোম্পানিকে অনুসন্ধানের অনুমতি প্রদান করেছে এবং কোম্পানিটি এ লক্ষ্যে বতর্মানে কাজ করছে। ব্রহ্মপুত্র নদের মধ্যে বালির চর এলাকায় চার হাজার হেক্টর জমিতে এই কাজ চলছে। প্রাথমিক জরিপে ইতিবাচক ফল পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে কোম্পানিটি আরও চার হাজার হেক্টর জমিতে অনুসন্ধানের জন্য আবেদন করে। জরিপ শেষে ইতিবাচক ফল পাওয়া সাপেক্ষে বাংলাদেশ এই কোম্পানিকে এ সম্পদ আহরণে নিয়োগ করলে একটি চুক্তির মাধ্যমে তা করতে হবে। সে ক্ষেত্র কী ধরনের চুক্তি হতে পারে? দেশের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী মূল্যবান খনিজের ১২ শতাংশ বাংলাদেশ পাবে, আর ৮৮ শতাংশ পাবে বিদেশি কোম্পানিটি। এতে ফুলবাড়ী কয়লা চুক্তির মতোই আহরিত সম্পদের সিংহ ভাগ চলে যাবে কোম্পানির হাতে। প্রকৃতপক্ষে খনিজসম্পদ কোম্পানির হাতে অর্পণ করে কোবল রয়্যালটি নেওয়ার চুক্তি করলে বাংলাদেশ যথার্থ লাভবান হবে না। তার তুলনায় ‘জয়েন্টভেঞ্চার’ বা ‘উৎপাদনে অংশীদারত্ব’ পন্থায় খনিজসম্পদ উন্নয়নের চুক্তি করা দেশীয় স্বার্থ সংরক্ষনে অধিকতর সহায়ক। কিন্তু এর জন্য প্রয়োজন সুস্পষ্ট নীতিমালা।

আরও একটি বিষয় উল্লেখযোগ্য। উদাহরণ হিসেবে কুড়িগ্রামে পাওয়া রিউটাইল নামক খনিজ বালিটির কথা ধরা যাক। রিউটাইলের বাজারমূল্য প্রতি টন ৪৬৫ ডলার। রিউটালের প্রধান ব্যবহার বিশেষ রং তৈরিতে এবং এই রিউটাইল রঙের বাজারমূল্য প্রতি টন ১৫ হাজার ডলার। সুতরাং কোম্পানি রিউটাইল বালি নিয়ে গিয়ে তার দেশে রং তৈরি করে লাভ করবে অনেক অনেক গুণ বেশি। কিন্তু বাংলাদেশ নিজে একটি রিউটাইল রং তৈরির প্লান্ট বসিয়ে একইভাবে অনেক গুণ বেশি লাভ করতে পারে। অথবা ধরা যাক অপর খনিজ জিরকনের কথা। দুই টন জিরকনের দাম এক হাজার ৪২৪ ডলার। অথচ প্রসেস প্লান্টের মাধ্যমে এর থেকে প্রাপ্ত এক টন জিরকনিয়ামের দাম ২২ হাজার ডলার। তাই বাংলাদেশের উচিত হবে আহরিত খনিজ সরাসরি কোম্পানিকে না দিয়ে নিজ দেশে প্রক্রিয়াজাত করে প্রাপ্ত উপাদান ভাগাভাগি করার শর্ত আরোপ করা, যা কিনা দেশের জন্য অনেক গুণ লাভ বয়ে নিয়ে আসবে। কিন্তু এহেন শর্ত আরোপের বাধ্যবাধকতা না থাকলে কোম্পানি নানা কৌশলে তার স্বার্থে সহায়ক পন্থাটি অবলম্বনে চুক্তি করার ব্যবস্থা করবে। আর শর্তের বাধ্যবাধকতা কেবল দেশের খনিজ নীতিমালা প্রণয়নের মাধ্যমেই সম্ভব।

দেশের মূল্যবান সম্পদ, তা কয়লা হোক বা খনিজ বালি হোক, আহরণ ও উন্নয়নে বিদেশি উন্নততর প্রযুক্তির ব্যবহার প্রয়োজন হতে পারে। টেকনোলজি ট্রান্সফার বা প্রযুক্তি হস্তান্তর দেশের স্বার্থে সহায়ক হয় তখনই, যখন বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তির ধারাগুলোতে সুস্পষ্টভাবে দেশীয় স্বার্থকে সমুন্নত রাখা হয়। আর এর জন্য দুটি আবশ্যক উপাদান হলো সুনির্দিষ্ট নীতিমালা: যেমন কয়লানীতি বা খনিজনীতি এবং সৎ প্রশাসন। বাংলাদেশে বর্তমানে এ দুটি উপাদানই দৃশ্যত অনুপস্থিত।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা।

প্রশাসনিক এলাকা

  • সংসদীয় এলাকার সংখ্যা: ১টি। নাম ও এলাকা: (২৬) কুড়িগ্রাম-২ (রাজারহাট(আংশিক), কুড়িগ্রাম সদর, ফুলবাড়ী)
  • উপজেলার সংখ্যা: ১টি
  • পৌরসভার সংখ্যা: ১টি
  • ইউনিয়ন পরিষদের সংখ্যা: ৮টি
  • গ্রামের সংখ্যা: ২৬৪টি

জনসংখ্যার উপাত্ত

  • জনসংখ্যা: মোট: ২৫৮৪৪০ জন, পুরুষ- ১৩২৪৪০ জন, মহিলা- ১২৬০০০ জন
  • ভোটার সংখ্যা: মোট -১৮০৯৭৯ জন, পুরুষ- ৮৭৯৮৮ জন, মহিলা- ৯২৯৯১ জন

শিক্ষা

  • শিক্ষার হার: ৩৬.৭৫%
  • কলেজের সংখ্যা: ১১টি
  • সরকারী কলেজ : ০২টি
  • পলিটেককনিক্যাল কলেজ: ০১টি
  • হাইস্কুলের সংখ্যা: ৩৭টি
  • মাদ্রাসার সংখ্যা: ২৭টি
  • সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা: ৭০টি
  • বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা: ৪৫টি

অর্থনীতি

  • মোট আবাদী জমির পরিমাণ: ৪৫০৫০ একর
  • অর্থকরী ফসল: ধান, গম, আলু, পাট, তামাক, সরিষা, সুপারী, বাঁশ, আখ, ভুট্টা প্রভৃতি।
  • শিল্প প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা: মোট-১৫৬টি, ৪টি বড়, ২৭টি মধ্যম এবং ১২৫টি কুটির শিল্প
  • পাকা রাস্তা: ১০৩ কি. মি.
  • কাঁচা রাস্তা: ৭৩০ কি. মি.

কৃতী ব্যক্তিত্ব

  • সৈয়দ শামসুল হক, ভাওয়াইয়া শিল্পী কছিমউদ্দিন,কাজী ঈমদাদুল হক, আহমেদ বকসী, প্রাণ বল্লভ করনজাই, এডভোকেট নজির হোসেন খন্দকার

বিবিধ

  • মসজিদের সংখ্যা: ৩৮৬টি
  • মন্দিরের সংখ্যা: ২৮টি
  • গীর্জার সংখ্যা: ২টি

দর্শনীয় স্থান

  • ধরলা ব্রিজ
  • ধরলা বাঁধ
  • শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি ফলক
  • স্বাধীনতার বিজয স্তম্ভ প্রভৃতি।

রমজান: কুরআন নাযিলের মাস

পবিত্র রমজান মাসকে মহান আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁর গ্রন্থাবলী নাযিলের জন্য পছন্দ করেছেন। তাই এ মাসের মর্যাদা আল্লাহর নিকট অনেক বেশী। বান্দার জন্য এ মাসে আল্লাহ্ বহুবিধ কল্যাণের দুয়ার খুলে দেন। মানুষকে যদি প্রশ্ন করা হয় যে, পৃথিবীতে তার জন্য সবচেয়ে বড় ও পরিপূর্ণ নেয়ামত কোনটি? সন্দেহ নাই যে, এতে মানুষেরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়বে। কিন্তু মুমিন এবং কুটিলতামুক্ত অন্তরের অধিকারী সত্যানুসন্ধানী যে কোন ব্যক্তির কাছ থেকে এ জবাব আসবে যে, আমাদের জন্য একটি সুবিচারে পরিপূর্ণ জীবন বিধান। এটিই পৃথিবীতে মানুষের জন্য সবচেয়ে বড় নেয়ামত হতে পারে। এরপর যদি জানতে চাওয়া হয় যে, সেটি কোনটি? পৃথিবীর ১৫০ কোটি মুসলমানের সাথে সাথে বহু অমুসলিম মনীষীও নিদ্বির্ধায় স্বীকার করেছেন যে, সেটি একমাত্র আলকুরআন। এমনকি মুসলিম তর্কবাগিশগণ বহু চ্যালেঞ্জে কুরআনের পক্ষে বিজয় অর্জন করেছেন। সর্বোপরি আল্লাহর পক্ষ হতে যে চ্যালেঞ্জ দেয়া হয়েছিল চৌদ্দশ’ বছর পূর্বে, তখন থেকে নিয়ে এযাবৎ কাল পর্যন্ত পৃথিবীর সমস্ত অবিশ্বাসীরা মিলেও তা গ্রহণ করতে পারেনি।
এই সেই কিতাব; আল কুরআন! এটি যাঁর পবিত্র বাণী সেই আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন:
شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِي أُنْزِلَ فِيهِ الْقُرْآَنُ هُدًى لِلنَّاسِ وَبَيِّنَاتٍ مِنَ الْهُدَى وَالْفُرْقَان
“রমাদান মাস; এতে কুরআন নাযিল করা হয়েছে মানুষের হেদায়াতের জন্য এবং সৎ পথের স্পষ্ট নিদর্শন ও সত্যাসত্যের পার্থক্যকারীরূপে।” [সূরা আল বাকারাহ্: ১৮৫]
ইবনে কাসীর এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন: হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে, এ মাসেই আল্লাহ্ তা’আলা অন্যান্য আম্বীয়ায়ে কেরামের উপর গ্রন্থ অবতীর্ণ করেন। ইমাম আহমাদ বলেন: ….আবূ সাঈদ আমাদের নিকট এই হাদীস বর্ণনা করেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “ইবরাহীম (আলাইহিস্ সালাম)-এর সহীফা রমজানের প্রথম রাতে, তাওরাত রমজানের ছয় তারিখে, ইঞ্জীল রমজানের তের তারিখে ও কুরআন রমজানের চব্বিশ তারিখে অবতীর্ণ হয়।” এছাড়াও জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ্ থেকে বর্ণিত আছে যে, “যবূর রমজানের বার তারিখে ও ইঞ্জীল আঠারো তারিখে এবং অন্যগুলো পূর্বোক্ত তারিখে অবতীর্ণ হয়।”
ইবনে মারদুবিয়া বলেন: সহীফাসমূহ, তাওরাত, যবূর ও ইঞ্জীল সংশ্লিষ্ট নবীর উপর একবারেই নাযিল হয়েছে। পক্ষান্তরে কুরআন একবারে নাযিল হয়েছে পৃথিবীর আকাশের ‘বাইতুল ইয্যাত’-এ, এবং তা রমজানের লাইলাতুল কাদর-এ অবতীর্ণ হয়। যেমনটি আল্লাহ্ বলেন: إِنَّا أَنْزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ “আমি একে মহিমান্বিত রাতে অবতীর্ণ করেছি”। তারপর তা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর বিভিন্ন ঘটনাবলীর প্রেক্ষিতে পৃথক পৃথক ভাবে নাযিল করা হয়। [ইবনে কাসীর: ১ম খণ্ড, পৃ: ৯৭-৯৮, ইফা প্রকাশন]
ওলামাগণের মতে, এ প্রক্রিয়ায় কুরআন নাযিল করা হয়েছে এজন্য যে, এর মাধ্যমে মানুষেরা তাদের জীবনের সাথে কুরআনের একটা সমন্বয় খুঁজে পাবে এবং এ কুরআন অনুযায়ী জীবনকে পরিচালনার শিক্ষা নবীর কাছ থেকে হাতে কলমে শিখে নেবে।
সুবহান আল্লাহ্! আল কুরআন আমাদের জন্য এমন এক গ্রন্থ যা অন্যান্য সকল আসমানী কিতাবের সত্যতা প্রকাশ করে তার অনুসারীদের নিকট। এসব ঐতিহাসিক দলীল প্রমাণাদি এতই বলিষ্ঠ যে, পৃথিবীর আনাচে কানাচে আজোর এর চাক্ষুষ প্রমাণ বিদ্যমান। পরন্তু পৃথিবীর উন্নতির সাথে সাথে দিনে দিনে এসব প্রামাণ্য সত্যের পরিধি বৃদ্ধি পেয়েই চলছে।
আমরা এখন সে মাস অতিক্রম করছি যে মাসে এই পরিপূর্ণ নেয়ামত পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন আল্লাহ্ তা’আলা। সুতরাং এ মাস কুরআনের মাস, এর মর্যাদা রক্ষা করা আমাদের ঈমানী দায়িত্ব এবং এ থেকে অফুরন্ত কল্যাণ লাভ করার জন্য আমাদেরকে কোমর বেঁধে ইবাদাতে লেগে পড়া উচিত।

দেশে সোয়াইন ফ্লুতে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা

রাজধানীর ধানমন্ডির বেসরকারি ল্যাবএইড হাসপাতালে মিতা চক্রবর্তী (৩৫) নামে এক রোগী গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১০টায় মারা গেছেন। তিনি সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বলে চিকিৎসকদের একটি সুত্র জানালেও সরকারিভাবে তা নিশ্চিত করা হয়নি।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা গত রাতে প্রথম আলোকে জানান, ল্যাবএইড হাসপাতালে সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্ত কোনো রোগী আছে, তা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সরকারকে জানায়নি। চিকিৎসা বা রোগ-ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে কোনো যোগাযোগ করেনি। তিনি বলেন, ‘তারা কী চিকিৎসা দিয়েছিল, আমরা জানি না।’ এ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আরও বলেন, মৃত ব্যক্তির চিকিৎসা-সংশ্লিষ্ট সমস্ত কাগজপত্র দেখলে বোঝা যাবে, তিনি আদৌ সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন কি না।
ল্যাবএইড হাসপাতালের একটি সুত্র জানায়, সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্ত হয়ে ১৮ আগস্ট মিতা চক্রবর্তী এ হাসপাতালে ভর্তি হন। মিতা এ হাসপাতালের চিকিৎসক বরেণ চক্রবর্তীর নিকটাত্মীয়। বরেণ চক্রবর্তী নিজেই তাঁর চিকিৎসা করছিলেন।
হাসপাতাল সুত্র জানিয়েছে, ভর্তির পর মিতা চক্রবর্তীকে প্রথমে সাধারণ জ্বর হিসেবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছিল। মাত্র এক দিন আগে ধরা পড়ে, তিনি সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্ত।
প্রথম আলোর কাছে তথ্য আছে, রাজধানীর অভিজাত আরও একটি বেসরকারি হাসপাতালে সোয়াইন ফ্লু আক্রান্ত রোগী আছে। কিন্তু ওই হাসপাতালও সরকারি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি বলে আইইডিসিআর সুত্রে জানা গেছে।
সরকারের দাবির সঙ্গে কাজের মিল নেই: সোয়াইন ফ্লু নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের কথা যত শোনা যাচ্ছে, চিকিৎসার প্রস্তুতি বাস্তবে তেমন চোখে পড়ছে না।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য গতকাল রোববার থেকে ১০০ শয্যার পৃথক ওয়ার্ড চালুর ঘোষণা ছিল। কিন্তু গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টায় এই প্রতিবেদক মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গেলে একজন পদস্থ কর্মকর্তা জানান, ডি-ব্লকের ১৬ তলায় একটি ওয়ার্ড খোলা হয়েছে।
প্রতিবেদক ডি-ব্লকে গিয়ে লিফটের লাইনে দাঁড়ান। লিফটচালক জানান, ১৬ তলায় যেতে হলে ভবনের অন্য প্রান্তের লিফট ধরতে হবে। নির্দেশমতো অন্য প্রান্তের লিফট ধরে ১১ তলা পর্যন্ত যাওয়া গেল। ওই লিফট আর ওপরে যায় না। এর পর সিঁড়ি ভেঙে ১৬ তলায় উঠতে গিয়ে বোঝা গেল, সচরাচর কেউ এই সিঁড়ি ভাঙে না।
প্রাথমিক কথাবার্তা শেষে একজন নিরাপত্তাকর্মী ১৬ তলার লোহার জালি ফটক (কলাপসিবল গেট) খুলে দেন। বারান্দা ঝাড়ু দিচ্ছিলেন কর্মী আবদুস সাত্তার। অন্য একটি কক্ষে একজন কাপড় ইস্ত্রি করছিলেন, একজন ঘুমাচ্ছিলেন। তাঁরা নির্মাণকর্মী। ওই তলায় কোনো চিকিৎসক চোখে পড়েনি, বড় বড় কক্ষগুলোয় একটিও শয্যা ছিল না; চিকিৎসার আয়োজন দুরে থাক।
বাংলাদেশে সোয়াইন ফ্লু পরিস্থিতি বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য সাংবাদিকেরা মূলত পান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআরের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে। বাংলাদেশে সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্ত ব্যক্তি প্রথম শনাক্ত হয় গত ১৮ জুন। গতকাল আইইডিসিআরের জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোস্তাক হোসেন জানান, এ পর্যন্ত মোট ১৯৯ জন আক্রান্ত হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক মাহমুদুর রহমান গত সপ্তাহে বলেছিলেন, তিন-চার মাসের মধ্যে ৭০ থেকে ৮০ হাজার মানুষ সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে পারে।
সোয়াইন ফ্লু প্রতিরোধে ও আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসায় সরকার দেশে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে−এই দাবি বারবার করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত সপ্তাহ থেকে বলা হচ্ছে, মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়সহ আটটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা পাওয়া যাবে রোববার থেকে। এসব হাসপাতালের নাম গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার করা হয়েছে।
গতকাল বেলা দুইটায় মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মো. আব্দুল মজিদ ভুঁইয়া জানান, সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্ত কোনো ব্যক্তি চিকিৎসা নিতে আসেনি। এলে কোথায় রেখে চিকিৎসা দেবেন−এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘ডি-ব্লকের ১৬ তলায় ব্যবস্থা করা হয়েছে।’ সেখানে তো কোনো প্রস্তুতি দেখা যায়নি−এ তথ্য জানালে তিনি বলেন, ‘আমরা ওই জায়গাটি চিহ্নিত করেছি।’ ওষুধ আছে কি না, চানতে চাইলে তিনি জানান, সোয়াইন ফ্লু চিকিৎসার ওষুধ আইইডিসিআরের কাছ থেকে তখনো হাসপাতালে পৌঁছায়নি।
সরকারের তালিকায় বারডেম হাসপাতালেও সোয়াইন ফ্লু চিকিৎসার ব্যবস্থার কথা আছে। গতকাল বেলা পৌনে তিনটায় ওই হাসপাতালের অনুসন্ধান কক্ষে গিয়ে জানতে চাইলে কর্তব্যরত দুই কর্মকর্তা জানান, সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসায় কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে তাঁদের জানা নেই। নিশ্চিত হওয়ার জন্য তাঁরা জরুরি বিভাগে যাওয়ার পরামর্শ দেন। জরুরি বিভাগে থেকে জানানো হয়, কোনো ব্যবস্থা নেই।
সোয়াইন ফ্লুতে মানুষ বিক্ষিপ্তভাবে আক্রান্ত হচ্ছে। কিন্তু সরকারি কর্মকর্তাদের অনুমান মতো শত শত মানুষ যদি আক্রান্ত হয়, তা হলে পরিস্িথতি সামাল দেওয়া কঠিন হবে−এমন আশঙ্কা অনেকের। এ প্রসঙ্গে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সহ-উপাচার্য রশিদ-ই-মাহবুব বলেন, এ রোগ প্রতিরোধের প্রধান উপায় হচ্ছে সঠিক তথ্য দিয়ে মানুষকে সচেতন করা। দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে আক্রান্ত ব্যক্তির তীব্র শ্বাসকষ্ট হলে তাকে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যবস্থা করতে হবে। এর জন্য দরকার হবে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ)। তিনি বলেন, ‘হাসপাতালে ১০০ শয্যার চেয়ে ২০টি আইসিইউ বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এ ব্যাপারে সরকারের বাড়তি উদ্যোগ চোখে পড়ে না।’

এই পাঁচটি পন্থা কাজে প্রয়োগ করুন।

জীবনে সফলতা অর্জন একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। এর জন্য প্রথমেই সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকা অতি আবশ্যক। না থাকলে আজই তৈরী করুন এবং নিম্নোক্ত নির্দেশনা গুলো অভ্যাস করুন। সুফল অবশ্যই পাবেন।

এই পাঁচটি পন্থা কাজে প্রয়োগ করুন।

১. কাজে ভয় দূর হয়। ভয় দূর করে গঠনমূলক কাজ করুন। নিষ্ক্রিয়তা- কিছুই না করা-ভয় বাড়ায়, আত্মবিশ্বাস ও মনোবল কম করে দেয়।

২. মনের ব্যাঙ্কে শুধুই গঠন মূলক চিন্তা সংগ্রহ করার ব্যাপারে সচেষ্ট থাকবেন। নিরাশাবর্ধক, হীনমন্যতা সৃষ্টি করে এমন চিন্তা-ভাবনাকে মনের দানব হয়ে ওঠার সুযোগ দেবেন না। নিজেকে অপ্রিয় ঘটনা বা পরিস্থিতির বিষয়ে চিন্তা করার অবকাশ দেবেন না।

৩. মানুষকে সঠিকভাবে চিনতে শিখুন। মনে রাখবেন, মানুষ মানুষে যত পার্থক্য তার চেয়ে সাদৃশ্য বেশী। অন্যের ব্যাপারে সঠিক ভাবনা, নায্য চিন্তা করবেন। সেও তো মানুষ! অন্যজনকে বোঝার চেষ্টা করুন। অনেকেই হয়ত চিৎকার করে তবে তেমন ক্ষতি করেন না।

৪. বিবেকের কথা শুনুন। এতে মনে বিষাক্ত অপরাধবোধ জাগবে না। সঠিক কাজ সাফল্যের একটি প্রধান অজ্ঞ।

৫. “আমার মধ্যে আত্মবিশ্বাস আছে, প্রচুর আত্মবিশ্বাস” আপনার সবেতেই যেন এই উক্তির প্রতিফলন হয়।

দৈনন্দিন জীবনে এই ছোট ছোট নির্দেশ গুলো মেনে চলুন। (বিশেষ করে ছাত্রদের জন্য)

ক) সামনের সারিতে বসুন। (ফলে আপনার মধ্যে আগ্রহ সৃষ্টি হবে।)

খ) চোখে চোখ রেখে কথা বলুন। (ফলে আপনার দৃঢ়তা এবং আত্মবিশ্বাস প্রমান করে।)

গ) হাঁটার গতি ২৫ শতাংশ দ্রুততর করে নিন। (ফলে আপনার সময়ের সাশ্রয় হবে।)

ঘ) আলোচনা ও কথাবার্তায় অংশ নিন। (ফলে আপনার লজ্জা কাটবে এবং আপনি বিচক্ষণ হয়ে উঠবেন।)

ঙ) প্রাণ ভরে হাসুন। (ফলে আপনার মন ভালো থাকবে এবং আপনি তারুণ্য ফিবে পাবেন।)

হিজরী ৬৯ সনের মসজিদ

আমরা সকলে জানি,বাংলাদেশে ইসলাম প্রচার শুরু হয় ইখতিয়ার উদ্দীন মুহাম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজীর বাংলায় আগমনের সময় থেকে। কিন্তু এই ইতিহাস বদলে যেতে পারে লালমনিরহাট জেলার বড়বাড়ী নামক এলাকার হারানো মসজিদের প্রকৃত ইতিহাসের কারনে। এই মসজিদের প্রত্নতাত্বিক নিদর্শনাবলী প্রমান করে,এই বাংলায় হিজরী ৬৯ সন কিংবা এর পূর্বেও ইসলাম ধর্মের প্রচার চলছিল।
এই মসজিদটি আবিস্কার করা হয় মাটির নিচ থেকে। সে সময় অনেকে ভেবেছিলেন এটি হয়ত কোনো মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ।এ সময় অনেকে এর ইট ও অন্যান্য নিদর্শনাবলী লুট করে নিয়ে যায়। ওই সময় জনৈক ব্যাক্তি একটি ইটের উপর কিছু আরবি হরফ দেখতে পান। সেখানে কিছু ইসলামিক বাক্য এবং হিজরী সন ৬৯ লেখা ছিল। তখন থেকে বোঝা যায় এটি মন্দির নয় মসজিদ। এর পর খননে ঐ আমলের আরো কিছু ইসলামিক নিদর্শনাবলী পাওয়া গেছে। ফলে প্রমানিত হয়, হিজরী ৬৯ সনেও এদেশে ইসলামের প্রচার চলমান ছিল। অর্থাৎ সাহাবায়ে কেরাম(রাঃ) গনের পবিত্র পদচারনায় ধন্য হয়েছিল এদেশের মাটি।যাহোক আমি যখন এই মসজিদ দেখতে গিয়েছিলাম তখন কিছু ছবি তুলে ছিলাম। ভাবলাম আপনাদের হয়ত কাজে লাগবে।

http://forum.projanmo.com/uploads/2009/01/1900_Image004.jpg
এখানে হিজরী ৬৯ সনের কথা লেখা রয়েছে।মুল ফলকের ছবি থেকে ছবিটি তোলা হয়েছে।
http://forum.projanmo.com/uploads/2009/01/1900_Image005.jpgউপরের ফলকের পাশেই এই ফুলের নকশা টি আছে।
http://forum.projanmo.com/uploads/2009/01/1900_Image001.jpg
এখানে ছিল মসজিদের দেয়াল
http://forum.projanmo.com/uploads/2009/01/1900_Image000.jpg
মসজিদের ইট সমুহ
http://forum.projanmo.com/uploads/2009/01/1900_Image003.jpg
মসজিদ সংলগ্ন ঈদগাহ মাঠের দেয়াল।
http://forum.projanmo.com/uploads/2009/01/1900_Image002.jpg
মসজিদের মিম্বর
http://forum.projanmo.com/uploads/2009/01/1900_k_(1).jpg
পথ নিদের্শক সাইনবোর্ড

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ