24 June, 2012

রাজারহাটে তিস্তানদীর ভাঙ্গনে ২০টি বাড়ী বিলীনঃ এলাকাবাসীর নদী ড্রেজিংয়ের দাবী

কুড়িগ্রামের রাজারহাটে তিস্তা নদীতে পানি কমে যাওয়ায় ২দিনে বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের হংসধর, রামহরি, পাড়ামৌলার গ্রামের ২০টি বাড়ী নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। অসহায় ওই পরিবারগুলো ঠাঁই নিয়েছে অন্যের জায়গায়। অব্যাহত নদীভাঙ্গনের মুখে ক্রমেই পাল্টে যাচ্ছে রাজারহাট উপজেলার মানচিত্র।
তিস্তা নদীর ভাঙ্গনের তান্ডবলীলায়  ভিটেমাটি, বসতঘর ও আবাদি জমি হারিয়ে নি:স্ব হয়ে পড়েছে উপজেলার নদী তীরবর্তী তৈয়বখাঁ, পাড়ামৌলা, হংসধর, চতুরা, রামহরি, খিতাবখাঁ ও গতিয়াসাম গ্রামের শতাধিক পরিবার। ভাঙ্গন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে আরো প্রায় ৫ শতাধিক পরিবারের সদস্য।
গত এক সপ্তাহে তিস্তা নদীর বুকে বিলীন হয়ে গেছে ৬০ টি পরিবার। নদীর তীর রা বাঁধের বক ভেঙে নদীগর্ভে পড়তে শুরু করায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন উপজেলার ভাঙ্গনপ্রবণ ডাংরারহাট ও বুড়িরহাট এলাকার লোকজন। নদীর ভাঙনের মুখে বিলীন হতে বসেছে বিস্তীর্ণ জনপদ। আর ক’হাত ভাঙ্গলেই কালিরহাট রেজিঃ প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি মাদরাসা ভবন নদীগর্ভে অদৃশ্য হয়ে যাবে বলে জানালেন হংসধর গ্রামের শিক্ষক সুশিল চন্দ্র রায়।
ইতিমধ্যে ওই এলাকার একটি জামে মসজিদসহ ১৫টি বাড়ী  নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে।
নদীভাঙ্গনের ভয়াবহতায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বিদ্যানন্দ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আবুল হাসেম ও ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বলেন, নদী ড্রেজিং হলে রাজারহাট উপজেলার মানচিত্রও রক্ষা পাবে। নদীর পারের মানুষ ভিজিডি, ভিজিএফসহ কোন রিলিফ চায় না, তারা নিজেদের বাঁচাতে নদী খনন চায়। সরকারকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
জরুরী ভিত্তিতে এসব এলাকার ভাঙ্গনরোধে ব্যবস্থা না নিলে বাস্তুহারাদের সংখ্যা দিন দিন দ্বিগুন হবে।
এ ব্যাপারে  রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম মাজহারুল ইসলাম বলেন, নদী ভাঙ্গন একটি জাতীয় সমস্যা। তাই সরকার এর দ্রুত পদপে নিবে।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আবু তাহের বলেন, রাজারহাট উপজেলার তিস্তার ভাঙ্গন ঠেকাতে পাউবো কাজ করে যাচ্ছে।
কুড়িগ্রাম- ৩ আসনের সংসদ সদস্য সাবেক মন্ত্রী মাঈদুল ইসলাম মুকুল জানান, সংসদে বিষয়টি উত্থাপিত করা হয়েছে। এছাড়া সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তপরে সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে, আশা করা হচ্ছে সরকার প্রতিবেশী দেশ চিনের সঙ্গে চুক্তি করে শীঘ্রই নদী ড্রেজিংয়ের কাজ শুরু করবে। তবেই রাজারহাটসহ গোটা এলাকা তিস্তা নদীর ভাঙ্গন থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে।

No comments:

Post a Comment

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ