আজ ৯ জুন কুড়িগ্রাম কাঠালবাড়ি গণহত্যা
দিবস। ১৯৭১ সালের ৯ জুন কুড়িগ্রাম শহর থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে কাঠালবাড়ি
বাজার ও আশপাশের ৬টি গ্রামে পাক বাহিনী তাদের এ দেশীয় দালালদের সহযোগিতায়
নৃশংস হামলা চালিয়ে হত্যা করেছিল ৩৫ জন নিরপরাধ বাঙালিকে। সেই সাথে লুটপাট ও
অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে ধ্বংস্তুপে পরিণত করে এসব গ্রাম।
১৯৭১ সালের ৯ জুন গণহত্যার শিকার শহিদ
আজিমুদ্দিনকে শুধু গুলি করে মারা হয়নি। গুলি করার পর তাকে আগুনে নিপে করা
হয়েছিল। সেই যন্ত্রনা আর বিভৎসতা আজও তারা করে ফেরে স্ত্রী সুরতভানকে।
বৃদ্ধ বয়সে এখন তিনি স্বামী হত্যার বিচার প্রার্থনা করেন।
শহিদ আজিমুদ্দিনের স্ত্রী সুরতভান জানান,
এতো দিনও আমার স্বামীকে মারার বিচার পাই নাই। কত কষ্ট সহ্য করি মানুষের
ঘরে-দুয়ারে কাজ-কাম করি ছেলে-মেয়েক মানুষ করছি। সকলের কাছে একটাই দাবি আমার
স্বামীর কবরটা একটু বান্দি (পাকা) দেয়ার ব্যবস্থা করেন।
স্থানাীয় মুক্তিযোদ্ধা ও প্রত্যদর্শীরা
জানান, বর্তমানে রাজনীতিতে একজন প্রতিষ্ঠিত রাজনীতিকের সহায়তায় পাকবাহিনী
কাঠালবাড়ি বাজারের ৩দিক থেকে আক্রমন করে। এসময় বাজার ছাড়াও শিবরাম সন্যাসী,
খামার প্রামাণিকটারি, সরদার পাড়া ও ফকির পাড়া গ্রামে অগ্নি সংযোগ করে।
গুলি করে হত্যার পর আগুনে নিপে করা হয় অনেককেই।
শহিদদের পূর্নাঙ্গ তালিকা তৈরি,
স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ ও শহিদদের পরিবারগুলোকে পুনর্বাসনে আজও সরকারী ভাবে
কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। তবে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদের উদ্যোগে একটি
স্মৃতি স্তম্ভ নির্মাণের চেষ্টা করা হলেও তা এখনও সম্পন্ন হয়নি। বিচারের
কাঠগড়ায় দাড় করানো যায়নি যুদ্ধ অপরাধিদের।
এ ব্যাপারে বীর প্রতীক আব্দুল হাই জানান,
২০০৮ সালে যুদ্ধাপরাধী বিষয়ে সদর থানায় একটি ডায়েরী করি কিন্তু এখন পর্যন্ত
সে বিষয়ে কোনো কার্যকর ভূমিকা নেয়া হয়নি। কাঁঠালবাড়ির গণহত্যার দোসরদের
বিচার করতেই হবে। কেননা তারা লুন্ঠন, অগ্নিসংযোগ ও গণহত্যা চালিয়েছিল। সেই
সাথে শহিদ পরিবারগুলো পুনর্বাসানেরও দাবি করেন এই বীর প্রতীক।
অপরদিকে কাঁঠালবাড়ী দিশারী সাংস্কৃতিক
গোষ্টি সভাপতি আব্দুল খালেক ফারুক জানান, দীর্ঘদিন পর সাংস্কৃতিক সংগঠনে
দিশারীর উদ্যোগে শহিদদের একটি তালিকা তৈরির চেষ্টা চলছে। এপর্যন্ত নাম
পাওয়া গেছে ২০ জনের। গণহত্যা দিবস পালনে পতাকা উত্তোলন, মিলাদ মাহফিলের
আয়োজন করা হয়েছে।
No comments:
Post a Comment